কফিন ও তিনটি দাঁড়কাক

রাষ্ট্রের আকাশে এখন কফিন,
কফিন ছুটে বেড়াচ্ছে–
শহর থেকে শহরে–
গ্রাম থেকে গ্রামে।
শোনা গেল কফিনের ভেতরে
কে জানি কে বসে;
হয়তো কৌটিল্যের বিদূষক,
নয়তো কবিদের নর্মসখা,
অথবা ধরা যাক,
সে এক শাসকেরই ভাঁড়,
রাজনীতির মঞ্চে এখন সে–
রঙ্গ, ভঙ্গ, বিরঙ্গ,
তামাশা-তামাশা-তামাশা
সার্কাস-সার্কাস-সার্কাস,
চলছে, চলছে, চলছে…
সব ফস্টি, নস্টি, ফাটকি নাটুয়া,
চষে বেড়াচ্ছে আকাশ, সেই কফিন!
দেখা গেল,
কফিনের উপর বসে তিনটি দাঁড়কাক,
দুটো কিন্তু অনবরত হাসছে:
মানুষেরা ছুটছে,
ভীত মানুষের দল–
শহরে, শহরে,
গ্রাম থেকে গ্রামে,
পাড়ায়, মহল্লায়, টং ঘরে,
হাবলু মাস্টারের চায়ের দোকানে।
প্রচণ্ড হট্টগোল চলছে,
গারদের শব্দে দোকানপাট,
গাড়ি-ঘোড়া-বাড়া,
সব বন্ধ।
মৈথুন, রসন–
কাম, কলা, কেলি–
লিঙ্গাম, লিঙ্গাম, লিঙ্গাম।
যৌনোৎসব, কামোৎসব,
এখন রাজনীতিকদের লিঙ্গাম,
রমণ-ক্ষমতা রতিশক্তি।
দিন শেষে সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডস–
এইসব মিলেমিশে;
রাজনীতি আটকে দ্বি-যৌনতার ট্রাফিক জ্যামে।
হঠাৎ শোনা গেল–
কফিনটা আদালত ভবনের সিঁড়ি বেয়ে
উঠছে, উঠছে, উঠছে…
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে,
জজ, ব্যারিস্টার, প্রসিকিউটার, উকিলেরা সব
রথের রশিতে ঝুলছে–
দে দোল দোল, দে দোল দোল, দে দোল…
আদালত মুলতুবি।
কফিন আদালত ছেড়ে
উড়াল দিলো আকাশে।
ভাসতে ভাসতে পৌঁছে গেল সেইখানে,
যেখানে হাজার মৃতরা–
সারি সারি শুয়ে
পোস্টমর্টেমের অপেক্ষায়।
অস্ত্র নিয়ে হাজার–
ডোম, চামার, সার্জন,
খোলা হলো কফিন
দেখা গেল শরীরটা নাই
শুধুই বেঁচে একটি মুষ্ক।
একটি দাঁড়কাক চিৎকার দিয়ে কয়,
এটা কার মুষ্ক?
উত্তর নাই, নাই উত্তর!
অবশেষে সিদ্ধান্ত–
কফিনের স্থান হোক
সংসদের কৃষ্ণগহ্বর ।

 

তারিখ: নভেম্বর ৯, ২০২১

প্রকাশক: সাবিহা হক, অধ্যাপক, ইংরেজি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ

all rights reserved by - Publisher

Site By-iconAstuteHorse