শব্দবীজ
অরুণ আবীর
মুহূর্তের মৃত্যুতে মন বিশ্বাসী হও নাকি!
জ্যামিতিতে মেপে আর গণিতে গুণনে
কতটুকু পাও মানুষেরে? অথবা
ইতিহাসের দুই দুয়ারি ঘরে
নির্বিশেষ মানুষ! আসে যায়
কি রেখে যায় তাদের আঙুল?
সময়! সময়! জটিল জালের বুননে
কে যে কোন সময়ের মানুষ!
যে সময় এখনো সুদূর, সে সময়ের
মানুষের মতো বিহ্বল তন্ময়-
দৃষ্টিজন্ম তারে পায়; তাহাদের
অস্তিত্বের দোহাই! তারা বলে
আমরা তোমাকে নেবো না
তোমাদের সাথে যাবো না-
সম্মত জীবন- প্রতিবন্ধীর পাঠশালায়
পাঠ নিয়েছে যেন!
মানুষের নির্মাণ; শব্দবীজ
বাক্যের প্রশস্ততায় মানুষের আবরণ
কামারশালার সন্ধ্যায় গনগনে আগুনে
আঁচে পুড়ে পুড়ে চিরকালের শিশু
আঙুল মুখে পুরে কাঁপতে থাকে
প্রতিবন্ধী- মানুষ গড়ার কল তারে
লেংচে ভেঙচে তীব্র উপহাস করে
রক্তিম লোহার একটা টুকরো
কেবলই পুড়ছে, পুড়ছে আরো!
যে কোনো সময়রেখায় পাও
যদি খুঁজে থাকো তারে
সে-ক্ষুধার-প্রেমের আর মরণের
জীবন সত্যকে মোমের ডানার মতো
গড়ে তাতে ভর করে উড়ে উড়ে
সূর্যের আরো কাছাকাছি
ইকারাস! তোমাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়!
তোমাদের শব্দ নেয় না কেন ওরা?
ফুলের মতো ফুটছে কোমল মানুষ
আর ছায়ার মতো দীর্ঘ হতে হতে
বোমার মতো ফাটছে; উৎপ্রেক্ষা-
তোমাদের চেনার পথ রুদ্ধ!
শুধু বপন করে দাও
ছায়া দীর্ঘ হতে হতে
আজ নয়; আগামী এক সহস্র শতাব্দীও
তারও অধিক আঙুলের কর গুনে
শব্দবীজ; তারি মধ্যে স্বপ্নের
পথ চিরবিস্ময় আয়নার ওপারে
নিঃসঙ্গ শূন্যতার পায়ের কাছে
রূপকথার লাঙল পড়ে থাক
নিজেরে জন্মাও তুমি তোমার উদরে
আর ভাঙো- আর গড়ো
আর যতদিন পারো অস্বীকার করো
পাথরে ক্ষোদিত সমস্ত পাপ
মানুষের কাছে মানুষের যত সঞ্চিত বিস্ময়
তারিখ: নভেম্বর ৮, ২০২১



AstuteHorse